Sunday, November 24, 2024

অর্ণেশের আইবুড়ো-ভাত

 আমাদের Sunday-Evening গ্রুপের প্রথম উইকেট পড়বে পড়বে করছে | সেই উপলক্ষ্যে গাঁট-ছড়া বাঁধার আগে  অর্ণেশ আর শ্রদ্ধাকে নিয়ে লেখা এই শুধু ছড়া | ক্যাম্পাসেই প্রেমের কিছু কিছু গল্প এতে তুলে ধরা রইলো |

____________________________________________

|| অর্ণেশের আইবুড়ো-ভাত ||

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------


শুনুন শুনুন শুনুন!


"বাজবে সানাই, সামনে শীতে" - প্রজাপতির বার্তা

ধৈর্য্য ধরুন, বলব সবই -- কোথায় ? কবে ? কার ? - তা !


বোলপুরের অর্ণেশ আর পাত্রী ভিনরাজ্যের 

এতসবের আয়োজন, আইবুড়োভাত আজ যে !


জৌনপুরের শ্রদ্ধা - তারা খানদানি ত্রিপাঠী !

কানপুরেই যোগাযোগ, পেয়েছে জীবনসাথী


অমলতাসের ছায়ায়, ক্যান্টিনে, ক্যাফেতে

"প্রথম দেখা"র দিন তুলে রাখে ম্যাপেতে !


গোপনে প্রেমটা শুরু, জানে না কাক পক্ষী

টের পেয়ে নীলগাই, হলো দেহরক্ষী !


ক্লাস কেটে সিনেমা আর ল্যাবে তালা বন্ধ

কি যে তার রহস্য, প্রেম-প্রেম গন্ধ । 


ছবি আঁকে ফাটাফাটি, শাকাহারী শ্রদ্ধা

কাঁটা মাছ বেছে দিয়ে, হলো সহযোদ্ধা ।


অগোছালো ঘরখানা, দিলে ভারী গুছিয়ে

ইঁদুরের পরিবার ছোটে ল্যাজ উঁচিয়ে !


এভাবেই দুজনেতে, চলে নানা ছন্দে

চার হাত এক হবে, নেই কোনো ধন্দে !


আজ থাক এইটুকু, ছোট ছোট গল্প  !

কাঁটা বাছাবাছি নেই , মাছ অতি অল্প ,


চিংড়ি মালাইকারি , তনয় যা দক্ষ !

ভাতের সুবাস ওঠে, মোহময় কক্ষ | 


কষা পাঁঠা, ভাজাভুজি, আর গোল্ড ফেলেকে

যতনে সাজিয়ে দি আইবুড়ো ছেলে কে ||



-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

[৯ই নভেম্বর , ২০২৪]

সুখের সময় শুরু 

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

সিগারেট আগেই উড়ে গেছে 

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

ঋতমা আর তনয় - এর সাথে | সব রান্না এরা দুজন মিলে করেছে |

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

কিংশুক না থাকলে রান্নাটাই সময় মতো হতো না | চাল ধুয়েছে | সকালে উঠে সবজি(আলু) বাজার করেছে | 

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------




Wednesday, November 6, 2024

রান্না শেখা

____________________________________________

|| রান্না শেখা ||

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------


ছোট্ট আমার হেঁশেলঘর , জাঁকজমকও কম 

হাতেখড়ি -- জল গরমে, পাকলে -- আলুর দম |

ছোটো থেকেই পেটুক ছিলাম, তাতেই শেখা শুরু,

দু-কান মুলে জানাই -- আমার মা-ই শিক্ষাগুরু |

মশলাপাতি  ঢেলেও, আমার রান্না ডাহা ফেল 

মায়ের হাতে খুন্তি দিলেই -- ভানুমতীর খেল !


ময়দা মাখা, লুচি বেলা, কেমন ছাড়ে তেলে !

হিং কচুরি হলো শেখা , গলবে মুখে দিলে !

ছাতু হোক, বা , আলু পেঁয়াজ, পেট খানাতে ঠুসে 

হাত জমেছে পরোটাতেও , খাবে আঙুল চুষে |

কাবলি -ছোলা বিরিয়ানী, কাছকি মাছের বড়া ,

না-'চা'-র দলে, পকোড়াটা ভাজতে হবে কড়া !

গরমকালে স্পেশাল মেনু - ওড়িয়া পান্তাভাত,

তালের পিঠে শিখতে গিয়ে হলাম কুপোকাত !

খুব বুঝেছি - গ্রীষ্মে, তালের পদগুলো সব সোজা ! 

তবু কেন বর্ষা এলেই, তালের বড় খোঁজা ?

এর চেয়ে তো শীতই ভালো, চড়ুইভাতি জমে ,

নলেন গুড়ের স্বাদে মাতি , শীত যেন না কমে !


এসব রান্না সহজ, মাছের ঝোলটা শেখা বাকি !

মা বললো - "এটাও সোজা ! দিচ্ছ কেন ফাঁকি ?"

যতই বানাই, স্বাদ খোলে না, আজব ব্যাপার সেকি !

খেলাম যেদিন তেলের ছ্যাঁকা , স্বাদ খুলেছে দেখি !

জড়িয়ে আমায় বললো মা যে - "এটাই ছিল বাদ !

মাছ ভাজতে ছ্যাঁকা খেলেই, খুলবে ঝোলের স্বাদ ||"



-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

[২৪শে অক্টোবর, ২০২৪]

Thursday, April 18, 2024

বেচুবাবু

 সতর্কীকরণ : এখানে বর্ণিত সমস্ত স্থান, কাল ও পাত্র সম্পূর্ণ কাল্পনিক। কোনরকম

সাদৃশ্য পেলে, তা সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত এবং কাকতালীয়।

_____________________________________________________________

------------------------------------------------------------------------
|| বেচুবাবু ||
------------------------------------------------------------------------
"বন্ধু-বান্ধব সদলবলে চলে আসুন লাইনে
চৌমাথা তে আসতে হবে, তারপরেতে ডাইনে। "
বিজ্ঞাপনের প্রদর্শনী'র ভীষণ আকর্ষণে
স্মৃতি রোমন্থন হয়ে যাক সব বাঙালীর মনে।
খাবার দাবার প্রসাধনী সবের বিজ্ঞাপন
সেকাল-একাল বাঁধিয়ে রাখা - দেওয়াল, ঘরের কোণ,
টেবিল জুড়ে সাজিয়ে রাখা, নিজের লেখা বই
পংক্তিভোজন সত্যিই ভালো, শেষ পাতে "টক দই" !
অটোগ্রাফটা চাইতে হবেই, লাগলো বেজায় ভালো
ডায়েরি নিয়ে গেলাম কাছে, সঙ্গে কলম কালো !
চশমা চোখে প্রশ্ন এলো "তুমি কি এসব জমাও?"
শুরুর দিকে রেগে গেলেও, করে দিলেন ক্ষমাও।
অমায়িক এই ব্যবহারে, ধন্য হলাম আমি
"আসল কথা - সইটা আমার একটুখানি দামী ।
দেখো কেমন বই লিখেছি!", ধরিয়ে দিলেন হাতে।
"পড়লে কিন্তু মজা পাবে, সকাল-দুপুর-রাতে !
সই করে দি, মূল্য দেবে - দুশো টাকা মাত্র
বইটা বিনামূল্যে, কারণ এখন তুমি ছাত্র। "
______________________________________________________________
--------------------------------------------------------------------------------------------------------

[১৫ই এপ্রিল , ২০২৪]



Wednesday, December 27, 2023

অন্যমনস্ক

নিয়মিত ল্যাবরেটরির কাজের ফাঁকে আমরা কয়েকজন বন্ধু মাঝে মধ্যেই চা-কফির আড্ডায় জমায়েত হই । কখনও CCD র পেছনের ক্যান্টিন , বা অ্যাকাডেমিক ক্যান্টিন ।  একেকদিন এর পেমেন্ট এক একজন করি। আমরা বলতে আমি, কিংশুক, বিধায়ক, অভিদীপ, ঋতমা, অর্নেশ আর তনয়। সেদিন গিয়েছি  CCD র পাশের ক্যান্টিনে । কথা হচ্ছিল বসন্ত বিলাপ সিনেমা নিয়ে । বিধায়ক গল্প করতে করতেই অন্যমনস্ক হয়ে পেমেন্ট করতে গিয়ে এক গন্ডগোল বাঁধায় , যা সামলে উঠতে আরও মাসদুয়েক লেগেছিল, অনেকের যৌথ উদ্যোগে। টানা দু মাস সেই ক্যান্টিনে সিঙ্গাড়া, বাজে চা আর কচুরী খেয়ে আমরা বিধায়ককে সে যাত্রা বাঁচিয়ে নিয়েছিলাম। সেই গল্পই নিচে বলছি । 




বিকেল হলেই কফির টানে আড্ডা দিতে ছুটি 
পড়াশোনা সব ভুলে যাই, এক জাগা তে জুটি,
রাজনীতি বা খেলাধূলা, নয়তো ভ্রমণকথা 
কেউ থাকে চুপ, কারো মনে - ব্যর্থ প্রেমের ব্যথা!

এমনই এক দিনে,
চা-সিগারেট কিনে,
মোরা কয়জন গল্পেতে মশগুল!
প্রেমিক ছেলের মন,
কাঁদলো কিছুক্ষণ,
তাইতো সেদিন করলে বড় ভুল!

 হয়েছে যা বলি শুনুন, প্রেমিক ছেলের কথা 
খানিক দূরেই দেখতে পেল, দাঁড়িয়ে "মনের ব্যথা"
চায়ের ভাঁড়ে চুমুক দিয়ে চোখ টেপা তার হাসি 
- "তোরা দাঁড়া আমি শুধু একটু ঘুরে আসি"
বলেই ছেলে পা বাড়িয়ে ফিরে দাঁড়ায় থমকে 
ভ্যাবলা হয়ে আমরা সবাই, দূরে তাকায় চমকে!

"আজকে আমিই খাওয়াই তোদের,
ষাট টাকা তো নাকি?
অনেক কথা জমে আছে, 
তাকেই বলা বাকি!" 

অনলাইনে পেমেন্ট দেবে, সে কী মেজাজ রাজার!
তাড়াহুড়োই শূন্য বেড়ে, দিলেন ছয়-হাজার!

Monday, October 29, 2018

রোগমুক্তি

মস্ত বাড়ি, ভর্তি লোকে , যৌথ পরিবার
তিনতলাতে একলা বুড়ি, কেউ নিল না ভার
দিনে রাতে দুবেলাতে খাবার দিতে আসে
ভালোবেসে ডাকলে পরেও কেউ বসে না পাশে |

কাজের মাসি দেখতে পেলে , খাবার দিতে এসে
মুখ থুবড়ে লুটোয় বুড়ি এলোমেলো বেশে
খবর যেতেই গোটা বাড়ির সবাই হুলুস্থূল
কী যে হলো বুড়ির, কেউ পায় না ভেবে কূল
বড় ছেলে দলিল খোঁজে, ডেকে আনে মোক্তার
পূজোর মাঝে একী বিপদ, ছুটে এলেন ডাক্তার
নাড়ি টিপে বললে যে সে, চোখে মোটা কাঁচ
আয়ু যে তাঁর ফুরিয়ে এলো, ঠিক করেছি আঁচ |

বাড়ে আদর, যত্ন সেবা, ওষুধ নিয়ম মতো
বুড়ির জন্য ভালবাসা উপচে পরে কতো
বুড়ি এবার বায়না করে পাড়ার পুজোয় যাবার
দেখবে চেখে অল্প করে, হরেক রকম খাবার
আটপৌরে শাড়ি পড়ে, চলল পুজোয় পাড়ায়
আহ্লাদে "চার কুড়ি" তখন কুড়ির ভিড়ে দাঁড়ায় !

ভিড়ের মাঝে ভিড় ঠেলে সে খেল পূজোর ভোগ
বললে বুড়ি - "এবার আমার সেরে গেছে রোগ |"

মনে মনে ভাবলে - পুজোয় রাখবে আমায় বন্দী !
আমি মানুষ সরল হলেও, কেমন ছিল ফন্দি !